ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় রাজ মোল্যা (৯) নামে এক শিশু শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে মো. ওয়ালিউল্লাহ (৪০) নামে এক মাদ্রাসাশিক্ষকের বিরুদ্ধে। আহত শিশু শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেওয়া হয়েছে।
রবিবার সকাল ১১টার দিকে পৌরসভার বাকাইল এতিমখানা মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত মাদ্রাসাশিক্ষক মো. ওয়ালিউল্লাহ পার্শ্ববর্তী বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবার।
বোয়ালমারী উপজেলার কোমড়াইল গ্রামের মো. মোকাদ্দেছ মোল্যার পুত্র শিশু রাজ মোল্যা বাকাইল মাদ্রাসায় নুরানি বিভাগের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর ট্রাংকের তালা ভেঙে কে বা কারা খাবার খেয়েছে। এই অভিযোগ পেয়ে শিক্ষক ওয়ালিউল্লাহ্ শিশু শিক্ষার্থী রাজ মোল্যাকে সন্দেহ করে মাদ্রাসার একটি কক্ষে নিয়ে যায়। এরপর ওই কক্ষের দরজা-জানালা বন্ধ করে শিশু শিক্ষার্থীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেত্রাঘাতসহ বেধড়ক মারধর করেন। পরে রাজ মোল্যা মাদ্রাসার পাশে তার বোনের বাড়িতে পালিয়ে গিয়ে ঘটনাটি পরিবারকে জানায়। এরপর পরিবারের সদস্যরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা রেহেনা বেগম জানান, আমার ছেলেকে হাফেজ বানানোর জন্য মাদ্রাসায় দিয়েছি। তাকে তো মেরে ফেলার জন্য দেইনি। আমার ছেলের সারা শরীরে বেত্রাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হুজুর আমার ছেলেকে দরজা-জানালা বন্ধ করে মারছে। এভাবে কোনও শিক্ষক কোনও ছাত্রকে মারতে পারে না। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।
এ বিষয়ে শিশু শিক্ষার্থী রাজ মোল্যা বলেন, আমি কারও ট্রাংকের তালা ভাঙিনি। কিন্তু হুজুর আমারে তারপরও অনেক মার দিছে। আমি হুজুরের পা ধরেও বলছি- আমারে মাইরেন না, তারপরও মারা বাদ দেই নাই।
অভিযুক্ত মাদ্রাসাশিক্ষক ওয়ালিউল্লাহ মারপিটের কথা স্বীকার করে বলেন, ওই ছাত্র মাদ্রাসার অপর এক ছাত্রের ট্রাংকের তালা ভেঙে খাবার খেয়েছে। তাই তাকে মারপিট করা হয়েছে।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান টিপু জানান, এভাবে মারধর করা ঠিক হয়নি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পরিচালনা কমিটি মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সিলভিয়া আশরাফী মিতা বলেন, শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেত্রাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আলফাডাঙ্গা থানার ওসি ওয়াহিদুজ্জামান জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।