পটুয়াখালীতে বৃদ্ধি পাচ্ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা
অপূর্ব সরকার,
বিশেষ প্রতিনিধি, পটুয়াখালী।
পটুয়াখালীতে দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ১৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়। যার মধ্যে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে ১০, দশমিনা ০২, কলাপাড়া ০১, গলাচিপা ০১, বাউফল ০১ এবং দুমকিতে ০১ জন ভর্তি হন। ডেঙ্গুতে ভুগছে ৭৪ এবং জেলায় মোট ৮২ জন ভর্তি আছেন। রবিবার দুপুরে পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম কবির হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৫ শয্যা বিশিষ্ট বেড থাকলেও রোগীর সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড তৈরি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখনো ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড করা হয়নি। মেডিসিন ওয়ার্ডে সাধারণ রোগীদের সঙ্গে তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর হাসপাতাল থেকে শুধু নাপা দিলেও স্যালাইন সহ সকল ঔষধ বাহির থেকে ক্রয় করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রোগীর স্বজনরা।
পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ডেঙ্গু আক্রান্ত পটুয়াখালী পৌর শহরের সবুজবাগ এলাকার আলমগীর মাদবর বলেন, ৪ জুলাই মঙ্গলবার শরীরে অস্বাভাবিক জ্বর উঠে তারপর বুধবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে ডাক্তার দেখাতে গেলে ডাক্তার টেস্ট দিলে ডেঙ্গু জ্বর ধরা পরে এবং ততক্ষণিক ভাবে হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। তবে হাসপাতাল থেকে নাপা বাদে তেমন কোন ঔষধ পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
চিকিৎসা নিতে আসা বাউফলের আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের লক্ষিপাশা গ্রামের বাসিন্দা ইমরান জানান, ঢাকা থেকে ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে আসেন তিনি। পরে গায়ে প্রচন্ড জ্বর ও বমি হয়। তারপর ২ জুলাই ডাক্তার ডাক্তার দেখালে ডেঙ্গু ধরা পরে এবং ৫ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। তবে একই অভিযোগ তার হাসপাতাল থেকে পর্যাপ্ত ঔষধ পাচ্ছেন না।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ দিলরুবা ইয়াসমিন লীজা জানান, ঈদের ছুটিতে রাজধানীর ঢাকা থেকে লোকজন গ্রামে আসে। যাদের মধ্যে বেশির ভাগ মানুষই ডেঙ্গু আক্রান্ত। এছাড়া বৃষ্টি বৃদ্ধি পাওয়ায় ডেঙ্গু বেড়ে যায়। হাসপাতাল থেকে পর্যাপ্ত ঔষধ পাচ্ছে না ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা এবং পর্যাপ্ত ঔষধ দেয়া হচ্ছে।
পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম কবির হাসান জানান, আসলে এখন বর্ষা মৌসুম চলে এবং ঢাকা থেকে ঈদে লোকজন গ্রামের বাড়িতে আসায় এবার পটুয়াখালীতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। তবে ড্রেনের মায়লা আবর্জনা ঠিকমত পরিষ্কার করলে ডেঙ্গু কিছুটা কমে যাবে। তিনি আরো জানান, জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত জেলায় ১৯০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়। তবে কোন মৃত্যু নেই ডেঙ্গুতে জেলায়।
তবে পটুয়াখালী জেলা সদর হাসপাতালের অন্যান্য সাধারণ রোগীদের সাথে কথা বললে রোগী ও স্বজনরা বলেন ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড করা হলেও পার্শ্ববর্তী সাধারণ রোগীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে কারন তীব্র গরমের প্রভাবে মাশারি ব্যবহারের অনীহা প্রকাশ করছেন রোগাক্রান্ত ব্যক্তিরা৷ অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখনো ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড করা হয়নি তাই তারাও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়ার চিন্তায় প্রহর গুনে সময় কাটাচ্ছেন।
Leave a Reply