বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের
অপূর্ব সরকার,
বিশেষ প্রতিনিধি,পটুয়াখালী।
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগ, কলাপাড়া পৌর ছাত্রলীগ এবং সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করার পর পরই পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্যের জোরালো অভিযোগ উঠেছে।
কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক কমিটি বাবদ দেয়া টাকার ছবিসহ টাকা ফেরত চেয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে মোটা অংকের টাকার বিনিময় কমিটিতে বিতর্কিত,মামলার আসামি ও বিএনপি পরিবারের সদস্যদের অন্তভুর্ক্ত করা হয়েছে। যা নিয়ে পুরো জেলা জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিক তালুকদার পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলামের কোরামের লোক হিসেবে পরিচিত। সোমবার (১০ জুলাই) রাতে কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হলে কমিটিতে রাখা হয়নি দলের ত্যাগী ও পরিকল্পিত নেতাদের । আর এতেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে।
আশিক তালুকদার তার ফেইসবুক পোষ্টে লিখেছেন, ‘জেলা ছাত্রলীগ দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যে টাকাগুলো নিয়েছেন ফেরত দেন, নাইলে গনভবনে যাবো বাকি ডকুমেন্ট নিয়ে।’ এদিকে কমিটি ঘোষণার পর আশিক তালুকদার তার মোবাইলে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতির কাছে টাকা ফেরত চেয়েছেন, এর একটি ( ৪৭ সেকেন্ড) এর অডিও রেকর্ড ও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
এতে শোনা যায় আশিক তালুকদার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিকে বলছেন ভাই আপনার সাইন পাওয়ার আছে, আপনি কমিটি দিছেন। এখন আমার টাকাগুলো ফেরত দেন। তবে এরপর সাইফুলকে বলতে শোনা যায় ‘ফোন রাখ, তুই ফোন রাখ।’
কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিক তালুকদার বলেন, ‘আমি ক্যান্ডিডেট হতে চাইনি, যেহেতু আমি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এরপরও জেলা সভাপতি সাইফুল ইসলাম আমাকে ক্যান্ডিডেট হতে বলে। বিভিন্ন সময় সে বিভিন্ন অজুহাতে ২০ হাজার, ৩০ হাজার এমনকি পাঁচ হাজার টাকা করেও নিয়েছে। ধাপে ধাপে আমার কাছ থেকে প্রচুর টাকা নিয়েছে। তার এক খালাতো ভাই এর মাধ্যমেও টাকা নিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সর্বশেষ কোরবানির চার থেকে পাঁচ দিন আগে আমাকে ফোন করে বলে কমিটি দেয়া হবে, কি করলি। আমার কাছে সে ২০ লাখ টাকা চাইলে আমি বলি ভাই এত টাকা কিভাবে দিবো। পরে আমি তাকে ১৫ লাখ টাকা দেই। পটুয়াখালী নেছারিয়া মাদরাসার দিকে যেতে হাতের ডানে খান মোশারেফ হোসেনের বাসার সিড়িতে বসে সে আমার কাছ থেকে টাকা নেয়।
আশিক তালুকদার বলেন, ‘১৫ লাখ টাকার মধ্যে পঞ্চাশ হাজার টাকার বান্ডিল ছিল ১২ টা, পাঁচশ এবং এক হাজার টাকার মিলিয়ে একটি বান্ডিলে ছিল এক লাখ টাকা এবং বাকিগুলো ছিল এক হাজার টাকার বান্ডিল।
এদিকে ফেইসবুকে টাকার ছবিসহ পোষ্ট করায় জেলা যুবলীগ এর প্রভাবশালী এক নেতা মোবাইল ফোনে আশিক তালুকদারকে ফেইসবুক পোষ্ট ডিলিট করতে বলেও জানান আশিক।এর একটি (১:১৮ সেকেন্ড) মোবাইল ফোনের কল রেকর্ডে বিষয়টির সত্যতা মিলেছে।
এ বিষয়ে জানতে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে (xxxxxxxxxxxx) একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে জেলা ছাত্রলীগ কলাপাড়া উপজেলার মোট তিনটি ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করার পর এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাৎক্ষকিভাবে তিনটি কমিটিই স্থগিত করে ইতিমধ্যে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।
Leave a Reply