৮ টি বাঁধ দিয়ে এক কিলোমিটার খালে মাছ চাষ, ৫০০ একর কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতা; চাষাবাদ ব্যাহত
অপূর্ব সরকার,
বিশেষ প্রতিনিধি , পটুয়াখালী।
পটুয়াখালী সদর উপজেলার মাদার বুনিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম হেতালিয়া ও বিরাজলা গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এক কিলোমিটার খালের মধ্যে ৮ টি বাঁধ দিয়ে কয়েকজন স্থানীয় লোক মাছ চাষ করছেন।এতে ওই এলাকার প্রায় ৫০০ একর কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে এবং আমন চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয় চাষীরা ওইসব অবৈধ বাঁধ অপসারণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। স্থানীয় কৃষক আব্দুল খালেক জানান, পশ্চিম হেতালিয়া ও দক্ষিণ বিরাজলা গ্রামের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত ইয়াকুব হাওলাদার বাড়ি থেকে জিন্নাত খার বাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার সংযোগ খালটি দিয়ে ওই এলাকার কৃষি জমির পানি অপসারণ হচ্ছিল।এক বছর আগে ওই এলাকার আলামিন খাঁ, হানিফ খান হালিম খানসহ কয়েকজন স্থানীয় লোক ওই খালটিতে বাধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করে।এতে বর্ষাকালে ওই এলাকার কৃষি জমি থেকে পানি অপসারণ বন্ধ হয়ে যায় এবং প্রায় ৫০০ একর জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।এসব জমিতে আমন চাষাবাদ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, এই বাধ অপসারণের জন্য এক মাস আগে আমি পটুয়াখালী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছি।কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন প্রতিকার পাইনি।গ্রামের অপর কৃষক মোঃ ফারুক বিশ্বাস জানান, খালটিতে অবৈধভাবে বাধ দিয়ে মাছ চাষ করার কারণে আমাদের কৃষিজমি বর্ষাকালে পানিতে তলিয়ে থাকে।পানি অপসারণ না হলে আমরা জমিতে আমন চাষাবাদ করতে পারব না।এই অবৈধ বাধ অপসারণের জন্য তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ
কামনা করেন। অপর কৃষক আব্দুল মান্নান বিশ্বাস জানান, একটি প্রবাহমান খালে বাঁধ দিয়ে যারা মাছ চাষ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। স্থানীয় এক গৃহবধূ জানান, পানির প্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষ করার কারণে খালের পানি দুষিত হয়ে গেছে। ওই পানি গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করা যায় না।এতে আমরা বিপাকে পড়েছি। বুধবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে ছোট খালটিতে বাধ দিয়ে পুকুরের মতো তৈরি করে তাতে মাছ চাষ করা হচ্ছে।আবার কেউ খালের একাংশ ভরাট করে গোয়ালঘর তুলেছেন।বাঁধ দিয়ে খালে মাছ চাষীদের একজন আল আমিন খান বলেন, আমরা খালটির একাংশে মাছ চাষ করছি। আরও অনেকে খালটি নিজিদের দখলে রেখেছেন।তারা খালটির দখল ছেড়ে দিলে আমরাও খালের বাধ অপসারন করে দেব।অপর মাছ চাষীরা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। এ ব্যাপারে পটুয়াখালী সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান ২০ জুলাই উপজেলার মাসিক উন্নয়ন ও সমন্বয় সভায় এ বিষয়টি আমি উপস্থাপন করেছি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে সরে জমিনে তদন্ত পূর্বক বিষয়টি তাকে অবহিত করতে বলেছেন। আমি ইতিমধ্যেই ওই এলাকা পরিদর্শন করেছি এবং খালটিতে অবৈধভাবে বাধ দিয়ে মাছ চাষের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলোচনা সাপেক্ষে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে জানান তিনি। এ ব্যাপারে পটুয়াখালী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুর রহমান জানান প্রবাহমান খালে বাধ দেয়ার কোন নিয়ম নেই, এটি একটি অপরাধ। স্থানীয় কৃষকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা খুব শীঘ্রই খালের বাঁধগুলো অপসারণ করবো।
Leave a Reply