ফরিদপুর সালথা উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধার নাতনীকে গলাটিপে হত্যার অভিযোগ
ফরিদপুর সদর থানাধীন কানাইপুর ইউনিয়নের রশিক নগর গ্রামে আজমিরা নামক এক গৃহবধূকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ করেছেন তাঁর স্বজনরা।
নিহত আজমিরা আক্তার (২৫) ফরিদপুরের সালথা থানার আড়ুয়াকান্দি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জয়নাল মোল্লার নাতনী এবং মো. মুর্তজা মোল্লা’র মেয়ে।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩ টার পরে এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে বলে ধারণা এলাকাবাসীর।
প্রবাসী এক খালাতো বোনের সাথে নিহতের স্বামী লিয়াকত মীরের পরকীয়ার সম্পর্কের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলে দাবি করেছেন নিহত আজমিরার ছোট চাচা মো. জাকির মোল্লা। তিনি জানান, ভোরে আমাকে আজমিরার জামাই ফোন দিয়ে বলে যে, আজমিরা গলায় দড়ি দিয়েছে। সে মারা গেছে সেটা বলেনি। আমরা ছুটে এসে দেখি বারান্দায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় চৌকির উপরে বিছানায় আজমিরার মরদেহ পড়ে আছে। গলায় নখের বড় বড় দাগ। মনে হচ্ছে গলা টিপ দিতে গিয়ে হাতের বুড়ো আঙুল গলায় লেগে গর্তের মতো দাগ ফেলে দিয়েছে। যে কেউ দেখলেই বুঝবে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে তাকে’।
তিনি আরও জানান, নিজ হাতে লিয়াকত আজমিরাকে গলা টিপে ও তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে তা আত্নহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলো। পরে এলাকাবাসী ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদে মুখে এক পর্যায়ে কৌশলে আত্নগোপনে চলে যান লিয়াকত মীর। নিহত আজমিরা শ্বশুর মো. সোহরাব মীর জানান, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, এসবের কিচ্ছু জানিনা।
তিনি আরও জানান, এমনিতে সংসারে কোন প্রকার কোন ঝামেলা ছিলোনা, অভাব অনটনও ছিলোনা। কিন্তু তবুও মাঝে মাঝে কি নিয়ে যেনো বউ আর ছেলের মধ্যে ঝগড়া হতো। আমি এতোকিছু জানিনা বাবা। আমি ভাবতেছি আমার নাতী-নাতনী দুইটার এখন কি হবে।
নিহত আজমিরা’র বড় ছেলে মো. রিয়াজ মীর (৭) জানান, ‘আমার বাবা-মায়ের সাথে গত রাতে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়, আমি রাত ২ টা পর্যন্ত জেগে ছিলাম। পরে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। তারপর কি হয়েছে আমি জানিনা।’
আজ শুক্রবার সকালে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আজমিরার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে পোস্টমর্টেমের জন্য মরদেহটি ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়।
আজমেরি নিহতের ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড নাকি আত্নহত্যা তা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দেখে হবে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর কোতয়ালি থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান। এ রিপোর্ট লেখার আগ পর্যন্ত এই বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন নিহত আজমিরার স্বজনেরা।
Leave a Reply