মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি
চিঠির শুরুতেই আমার সুশ্রদ্ধা ও সালাম গ্রহণ করুন আসসালামু আলাইকুম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী… মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল ছিল আপনার সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত ও চরম ব্যর্থতা, নিজের ঘাড়ে কুড়াল মারার মত কান্ড। বঙ্গবন্ধু সরকার মুক্তিযোদ্ধা কোটা দিয়েছিল আর আপনার সরকার কেড়ে নিলো। এই ব্যর্থতার দায়ভার আপনার উপদেষ্টাদের, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এমপি ও মন্ত্রীদের, উনারা আপনাকে সঠিক পরামর্শ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমার পিতা বঙ্গবন্ধু পরিবারের জন্য জীবন-যৌবন,সুখ শান্তি বিসর্জনসহ স্ত্রী- সন্তানের ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন করে বঙ্গবন্ধু পরিবারের জন্য জীবন বাজি রেখেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করে দীর্ঘ দিন জেল খেঠেছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আপনার সরকারের উচিত ছিল… বীর মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধকালীন কমান্ডার লোকমান হোসেনের পরিবারের খোঁজখবর রাখার। আমিও বিনা পয়সায় আপনার কামলা দিয়ে যাচ্ছি, যাকে গ্রামের ভাষায় বলে মাগনা কামলা। আমার চাইতে আপনার ভালো কেউ চাইতে পারেনা, হয়তো আপনিও কমবেশি জানেন। আপনার সরকারের সবচাইতে বুদ্ধিমানের কাজ হতো কোটা সংস্কার করে ২০% আজীবনের জন্য মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে কোটা দিতে পারতেন। এই সুযোগ আপনার হাতে আসছিল, তাতে সারা বাংলাদেশের মানুষেরও সম্মতি থাকতো। আপনি দুই কুল খুশি রাখতে পারতেন। তারা তো মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল চায়নি, তারা কেউ বলিনি যে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের বিসিএস, সহকারী শিক্ষক পদে কোটা দেওয়া যাবেনা। পওষ্য কোটা, মহিলা কোটা অন্যান্য কোটা সব কোটাই রয়ে গেল শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করলেন। আপনাদের এই ভুল সিদ্ধান্তের কারণে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষকে একদিন চরম খেসারত দিতে হবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন কারী সেই সব নেতারা এখন রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে পরিচিত। তারা যেহেতু রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে পরিচিত, তাই মুক্তিযোদ্ধা কোটা আবার ফেরত দেওয়া উচিত। কোটা বাতিল ছিল সরকারের একটি ভুল সিদ্ধান্ত, খুব দ্রুতই ভুল সংশোধন করা উচিত । তারা কোটিপতি হওয়ার লোভে ছাত্র সমাজকে ধোঁকা দিয়েছে। কোটা সংস্কার কারীদের আন্দোলন কে আপনার সরকার গুরুত্ব দিলেও “বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ” এর কোটা ফেরতের আন্দোলন কে সরকারের পক্ষ হতে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকার পরেও রাষ্ট্রদ্রোহীদের আন্দোলনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়, অথচ বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের যৌক্তিক এবং মানবিক আন্দোলন কে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। টেলিভিশন ও নিউজ পেপার আমাদের আন্দোলন ফোকাস করে না।
নুরুল হক গংদের চাইতে বেশি লোক নিয়ে আমরা বিশাল বিশাল আন্দোলন করার পরেও আমাদের আন্দোলন কে সরকার থেকে কোন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি, মিডিয়া আমাদেরকে দেখেও দেখে না অথচ আপনি নিজে বলেছিলেন আন্দোলন করতে পারলে কোটা ফেরত দিবেন। রাস্তাঘাট অবরোধ বন্ধ করে দিতে পারতাম কিন্তু সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে তা করিনি বলে আমরা কিন্তু দুর্বল নই। বীর মুক্তিযোদ্ধার ২ লক্ষ পরিবার হলেও তিন কোটি ভোট নিয়ন্ত্রণ করি আমরা। টাকার বিনিময়ে আমাদেরকে কেউ কিনতে পারেনা, আমরা যেদিকে থাকি ভোটের পাল্লাও সেদিকেই ভারী থাকে । সরকারি দল, বিরোধী দল, স্বাধীনতা বিরোধীদের সংগঠনও মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল চায়নি, বাতিলের জন্য কোন আন্দোলনও করেনি। তাহলে কোটা বাতিল করা হলো কেন?? মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের এত বড় সর্বনাশ কেন হল ?? যদি সংস্কার করেও কিছু কমিয়ে কোটা দিতেন বিসিএস, সহকারী শিক্ষক পদে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের চাকরি হতো, প্রশাসনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বৃদ্ধি হতো, প্রশাসন হতো দুর্নীতিমুক্ত। মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সাথে যারা জড়িত তারা রাষ্ট্রদ্রোহী, তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন?? আপনার কাছে আমাদের বিনীত আবেদন রাষ্ট্রদ্রোহীদের গ্রেফতার করা হোক ও মুক্তিযোদ্ধা কোটা ফেরত দেওয়া হোক।
সরকারি চাকরিতে যে নিম্ন পদে কিছু কোটা নামে মাত্র দেওয়া আছে তার কোন বাস্তবায়ন নাই, এটা খুবই দুঃখজনক।
মোঃ সোলায়মান মিয়া
চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ
কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
Leave a Reply