1. admin@muktijoddhatv.xyz : admin :
  2. mainadmin@muktijoddhatvonline.com : mainadmin :
শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১৯ পূর্বাহ্ন

জাতীয়করণ; প্রয়োজন সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি করা।

স্টাফ রিপোর্টার, মুক্তিযোদ্ধা টেলিভিশন
  • Update Time : শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০২৩
  • ২৪৬ Time View

প্রসঙ্গ: জাতীয়করণ; প্রয়োজন সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি করা।

মোঃ ওমর ফারুক।

এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, দীর্ঘ ২৯ টি দিন ধরে মাধ্যমিক শিক্ষকদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ (এমপিওভুক্ত বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকগণ) জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি সহ আমরণ অনশন পালন করছেন! তবে সবচেয়ে বেশি আশ্চর্য হচ্ছি এটা দেখে যে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কোনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মাননীয় মন্ত্রী বা উপমন্ত্রী মহোদয় বা অন্য কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি অথবা সুশীল সমাজের প্রতিনিধি বা রাষ্ট্রের অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকে কেউই শিক্ষকদের পাশে গিয়ে দাঁড়াননি! কেউ যেমন শুনাননি কোনো আশার বাণী তেমনি দিতে যান নি কোনো সান্তনার বাণীও!

যদিও তাদের দাবি অযৌক্তিক বা অমূলক নয়, তথাপি এক যোগে প্রায় ২০ হাজার বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ একেবারেই সহজ বিষয় নয়; আমি জাতীয়করণ আন্দোলন শুরুর দিকে এ বিষয়ে একটি নিবন্ধে লিখেছিলাম। যেখানে আমি যৌক্তিকভাবে বলেছিলাম যে, একযোগে এই মুহূর্তে জাতীয়করণ অত্যন্ত কঠিন কেননা এটি করতে গেলে রাষ্ট্রের সক্ষমতার বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হবে! সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশে ও করোনা মহামারিজনিত কারণে এক ধরনের আর্থিক সংকট রয়েছে, যা সচেতন নাগরিক মাত্রই ওয়াকিবহাল। আমি মনে করি, রাষ্ট্রের সক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সাথে পর্যায়ক্রমে (কিছু শর্ত সাপেক্ষে হলেও) মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করতে হবে- এটি সময়ের অনিবার্য দাবি। কেননা ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্নপূরণে মাধ্যমিকে স্তর বাধ্যতামূলক করতে হবে। আর এটি করতে গেলে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের কোনো বিকল্প নেই। যেহেতু ভবিষ্যতে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ সরকারের একটি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিবেচনাযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ একটি এজেন্ডা সেহেতু এই বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের ব্যাপারে আন্তরিকতা ও নমনীয়তা প্রদর্শন ও জরুরী বলে মনে করি। শিক্ষকগণ যেহেতু সকলের জন্য সমান সুযোগ লাভের অধিকারের যৌক্তিক দাবিতে এ আন্দোলন করছেন এবং নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেহেতু প্রাইভেট কোচিংকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে, সেহেতু শিক্ষকদের মর্যাদা ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়া নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে সন্দেহ নেই!

এই মুহূর্তে জাতীয়করণ সম্ভব না হলেও তাদেরকে কিছু সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে আপাতত তাদের ঘরে ফেরার মতো সম্মানজনক একটি পথ খুলে দেওয়া উচিত বলে একজন শিক্ষক হিসেবে আমি মনে করি।

আপনারা জানেন, গত ২৫ জানুয়ারি তারিখে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়নের দাবিতে সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের পক্ষ থেকে “স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটি”র ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ১৮ মার্চ তারিখে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একই দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মানববন্ধনে বেসরকারি শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের সমাধানের আপাত উপায় হিসেবে ক্ষমতাসীন শিক্ষা বান্ধব সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে শিক্ষক নেতারা সকল পর্যায়ের শিক্ষকদের জন্য একটি মানসম্মত স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবি জানান। পরদিন ১৯ মার্চ আমি নিজে জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখভাগ দিয়ে শিক্ষা ভবনে যাওয়ার সময় বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নিচে বেসিক শিক্ষকদের যে মানবেতর অবস্থায় দেখেছি, তা সত্যই অত্যন্ত কষ্টদায়ক! শিক্ষকদের সঙ্গে এমন অমানবিক আচরণ প্রত্যাশিত নয়।

আমি মনে করি এই মাহে রমজানে তাদের এই আন্দোলনকে আর সামনে এগোতে না দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি পর্যায়ের কারো তাদের সঙ্গে কথা বলে বাস্তবতার নিরিখ তাদের কিছু সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে এই মুহূর্তে একযোগে জাতীয়করণের বাস্তবতা বিবর্জিত আন্দোলন থেকে সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনের সুযোগ দেওয়া উচিত। আমি মনে করি আমাদের শিক্ষকগণ ও বাস্তবতাকে অস্বীকার করেন না, তাই বলে তাদের এমন নিয়মতান্ত্রিক এবং অহিংস যৌক্তিক আন্দোলনের কি কোনো মূল্য সরকার তথা জাতির কাছে থাকবে না? মাহে রমজানে এই কষ্টদায়ক আমরণ অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি থেকে তাদেরকে ঘরে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সুদৃষ্টি কামনা করছি। মাধ্যমিক শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে অর্থাৎ মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন এবং নতুন কারিকুলাম এর সফল বাস্তবায়নে সকল পর্যায়ের শিক্ষকগণের সামাজিক মর্যাদা ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের জন্য এই মুহূর্তে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি। আমরা মনে করি ২০১০ এর জাতীয় শিক্ষানীতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কাল বিলম্ব করা মোটেই সমীচীন হবে না। মাধ্যমিক শিক্ষা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক উন্নয়নে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে ভেঙে একটি স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন সময়ের অনিবার্য দাবি। আর স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করা গেলে মাধ্যমিক সেক্টর দ্রুত এগিয়ে যাবে এবং মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ সহ শিক্ষকদের জন্য একটি মানসম্মত বেতন স্কেল বাস্তবায়নও সম্ভব হবে বলে এই সেক্টরে কর্মরত শিক্ষকগণ বিশ্বাস করেন।

লেখক:
মোঃ ওমর ফারুক
শিক্ষক, সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, খুলনা

মূখপাত্র
স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটি।
ইমেইল: omurfaruknghs12@gmail.com

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss