মোটা অংকের টাকা না পেয়ে হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়া ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠালো পুলিশ
মোঃ মহিউদ্দিন সুমন
পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য ও ক্ষমতার অপব্যাবহার করে আশ্রাফুল হাওলাদার (২২) নামের এক শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এমন অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার(১৮-মে) রাত সাড়ে ৮টায় আসামীর নিজ বাড়ীতে থেকে গ্রেফতারের পর হাইকোর্টের জামিন নামার কপি দেখালেও তা আমলে নেয়নি পুলিশ। পরিবারের অভিযোগ-আটকের পর পুলিশ মোটা টাকা দাবি করে, তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ক্ষমতার বলে শুক্রবার(১৯-মে) সকাল সাড়ে ৯টায় তাকে কারাগারে পাঠান।
আশ্রাফুল হাওলাদার পটুয়াখালী সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের বাজারঘোনা গ্রামের আব্দুল লতিফ হাওলাদারে ছেলে। এঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতি।
আশ্রাফুলের চাচা রাজা মিয়া ও পরিবারের সদস্যরা বলেন, বৃহস্পতিবার সদর থানা পুলিশের এএসআই মিজানুর রহমান আশ্রাফুলকে গ্রেফতারী পরোয়ানা দেখিয়ে থানায় আনেন। আমরা ওই রাতে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী আলী আহসান মোল্লার স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্র এবং জামিন নামার অনলাইন কপি দেখালেও তিনি তা আমলে না নিয়ে ওসি স্যারের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। পরবর্তীতে আমরা ওসি মনিরুজ্জামানের কক্ষে গিয়ে হাইকোর্টের যাবতীয় কাগজপত্র দেখালে ওসি মনিরুজ্জামান তা আমলে না নিয়ে আমাদের কাছে মোটা টাকা দাবি করেন। আমরা টাকা না দিতে পেরে থানা থেকে চলে আসি। আজ আশ্রাফুলকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী আলী আহসান মোল্লার প্রত্যয়নে দেখা যায়-একটি সিআর মামলায় হাইকোর্টের হাজির হলে আশ্রফুল হাওলাদারকে ছয় সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ও মো. আমীনুল ইসলামের দ্বৈত বেঞ্চ। হাইকোর্টের এ আদেশটি পটুয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটকেও অবহিত করা হয়েছে। গত ১৭ মে হাইকোর্টের ওই দুই বিচারপতির দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন। হাইকোর্টের ওই জামিননামার টেন্ডার নং-৩৪৮৮১ এবং কার্য তালিকা নং-৫৪৪।
এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাড. মো. আল-আমিন হাওলাদার বলেন, একটি সিআর মামলায় গত ১০ মে আসামী আশ্রাফুল হাওলাদার গংএর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানার আদেশ দেন করেন পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের ম্যাজিষ্ট্রট মোহাম্মদ আশিকুর রহমান। এরপর আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। অথচ পুলিশ আশ্রাফুলকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছেন, যা আইন পরিপন্থি এবং ও ক্ষমতার অপব্যবহার।
এ প্রসঙ্গে এএসআই মিজানুর রহমান গনমাধ্যমকে জানান, আমি ওয়ারেন্ট অনুযায়ী আসামীকে গ্রেফতার করেছি। এরপর আশ্রাফুলের পরিবার ওসি স্যারের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ওসি স্যার কাগজপত্র দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান গনমাধ্যমকে জানান, ওয়ারেণ্টভুক্ত একজন আসামীকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছে, তার নাম জানা নেই। জামিন সম্পর্কিত কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই, জামিন তো কোর্ট দেয়। আসামী পক্ষ এক আইনজীবীর একটা মৌখিক বক্তব্য দেখিয়েছেন। আমরা রিকলটাকে প্রাধান্য দেবো। ##
Leave a Reply