সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা
অপূর্ব সরকার,
বিশেষ প্রতিনিধি , পটুয়াখালী।
দেশের মৎস্য সম্পদের সুরক্ষা ও মাছের বংশবিস্তারে সাগরে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে।
১৯ মে (শুক্রবার) মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
মেরিন ফিশারিজ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে প্রতি বছর ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ। ২০১৫ সালে এ নিষেধাজ্ঞা চালু হয়। প্রারম্ভে শুধু ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলার নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকলেও ২০১৯ সালে সব ধরনের নৌযানকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়।
এদিকে সাগরে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ায় উপকূলীয় এলাকা পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন মহিপুর ও আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রসহ আশেপাশের এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, ইতিমধ্যে অধিকাংশ ট্রলার বন্দরে এসে পৌঁছেছে। তবে আগত জেলেদের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ কারণ অনেক জেলেই ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে দিন কাটাচ্ছে। বেশ কয়েক বছর ধরে কাঙ্খিত ইলিশ মাছ ধরা না পড়ায় অনেকে জেলে পেশা পরিবর্তনের কথা জানিয়েছেন। জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাৎস্যভিত্তিক অর্থনীতির সুরক্ষায় এসব জেলেদের পেশা পরিবর্তন রোধে খাদ্য সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধিসহ আর্থিক সহায়তা প্রদানের দাবি তাদের। এছাড়াও নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে ভারতীয় জেলেদের অগ্রাসন রোধেও কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছেন তারা। গভীর সমুদ্র থেকে আলীপুর মৎস বন্দরে ফেরা এফবি জান্নাত ট্রলারের মাঝি মো. কবির বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার সময়ে ৭ থেকে ৮ দিন ছিলাম তীরে তারপরে সাগরে ছিলাম ৪ দিন আবার চলে আসছি। ৭০ হাজার টাকা খরচ করে ৪৫ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। সরকার আমাদের ৮৬ কেজি চাল দেয় কিন্তু এই বাজারে শুধু চাল দিয়ে সংসার চলে? কুয়াকাটার হোসেনপাড়া এলাকার জেলে আ. রহিম বলেন, সরকার ২২ দিনের যে অবরোধটা দেয় তা আমরা মানি এবং উপকারও পাচ্ছি তবে ৬৫ দিনের অবরোধে জেলেরা ঋণের বোঝা বাড়াচ্ছে মৎস্য অন্যদিকে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে নিচ্ছে। আমাদের দাবি এই সব বিষয়ে সরকার যেন নজর দেয়। মৎস্য সম্পদের সুরক্ষায় এই সময় সমুদ্রযাত্রার প্রবেশপথগুলোতে নজরদারি জোরদার করা, মৎস্য নৌযানের সমুদ্রযাত্রা শতভাগ বন্ধ নিশ্চিত করা, দেশের সমুদ্রসীমায় বিদেশি নৌযানকে মৎস্য আহরণে বিরত রাখা, নৌযান, নোঙর স্থলে আবদ্ধ রাখা, সমুদ্রের তীরবর্তী বরফ কলগুলো সীমিত পর্যায়ে চালু রাখা, মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের সমুদ্রতীরবর্তী মাছ অবতরণকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখা, সব মাছ ধরার নৌযানকে পর্যায়ক্রমে ট্র্যাকিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা।
Leave a Reply