পটুয়াখালীতে ধূম্রজালে ছেয়ে যাচ্ছে স্কুল ছাত্রের মৃত্যু রহস্য
অপূর্ব সরকার,
বিশেষ প্রতিনিধি,পটুয়াখালী।
গত শুক্রবার (২৩ জুন) দুপুর আনুমানিক দুইটার দিকে পুরাতন জেল খানার পিছনে নির্মাধীন লেকের পানি থেকে পটুয়াখালী সরকারী জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর মেধাবী শিক্ষার্থী জয়ন্ত সাহা (১৪) এর লাশ উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে মৃত্যুর সঠিক কারন জানা না গেলেও নিহত জয়ন্ত সাহার পরিবারের দাবি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পৌর শহরের একেএম কলেজ রোডস্থ এলাকার তাপস সাহা ওরূপে যাদব সাহা’র দুই ছেলে- মেয়ের বড় ছেলে।
জয়ন্ত’র বন্ধু বাপ্পি পাল জানায়, সে অর্ঘ্য নামের এক বন্ধুকে নিয়ে লেকে গিয়েছিল গোসল করতে। সেখানে গিয়ে দেখে অরিজিৎ নামের একটি ছেলে লেকের ঘাটে বসে আছে। সে বলে বাপ্পি মামা ও অর্ঘ্য দাদা গোসল করতে আসো। এরপর তারা দুজন গোসল করতে যায়। বাপ্পি সাঁতার জানে না তাই হাঁটু সমান পানিতে দাঁড়িয়ে পানি ছিটাতে ছিলো। পরে তারা সেখানে জয়ন্তকে দেখতে পায়। জয়ন্ত পানি থেকে উপরে উঠে, আবার পানিতে নেমে লেকে থাকা প্লাস্টিক ড্রামের নৌকা আনতে যায়। পরে নৌকাটি নিয়ে এসে তাদেরকে উঠতে বললে বাপ্পি সেটাতে উঠতে রাজি হয় না। কিন্তু অর্ঘ্য ও অরজিৎ সেটাতে উঠে। কিছুক্ষণ পর প্রিতম নামের একটি ছেলে সবাইকে ডেকে বলে জয়ন্ত ডুবে গেছে। এই কথা শুনে বাপ্পি আশেপাশে থাকা লোকজন ডাকাডাকি করতে থাকে। সেই ডাকাডাকি শুনে লেকরোড এলাকার স্থানীয় হাসিব নামের একটি ছেলে জয়ন্তকে পানি থেকে উপরে নিয়ে আসে। জয়ন্তকে পানি থেকে উপরে নিয়ে আসা হাসিব বলে, আমি কয়েকটি ছেলের ডাকাডাকি শুনে মোবাইলটা রেখে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে জয়ন্তকে উপরে নিয়ে আসি। পরে একটি রিক্সা করে হাসপাতাল নিয়ে আসি।
জয়ন্ত’র ফুফা সুভাষ চন্দ্র সাহা বলেন , আমার কাছে জয়ন্তর মৃত্যু স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
অর্ঘ্য বলেন, আমি আর বাপ্পি পানিতে নেমে কথা বলছিলাম। প্রিতম ও জয়ন্ত নৌকায় উঠছিল। পরে কিভাবে কি হইছে দেখি নাই।
জয়ন্তকে পানি থেকে তীরে নিয়ে আসা হাসিব বলেন, কয়েকটি ছেলের ডাকাডাকি শুনে পানিতে নেমে জয়ন্তকে তুলে এনে রিক্সা করে হাসপাতাল নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করে।
পরিবার ও এলাকাবাসি সহ সবাই পৌরসভার সিসি ফুটেজ এর অপেক্ষায় কারন সবার ধারনা ধুম্রজাল স্মৃষ্টি হয়েছে সবার তথ্য বা বক্তব্য ঘিরে।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, ময়না তদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ অন্তেষ্টিক্রিয়ার জন্য পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারন বোঝা যাবে। জয়ন্তর বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সদর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। একটি টকবগে ছেলের আকস্মিক মৃত্যুর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার বন্ধুবান্ধবসহ সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হয়েছে। তাতে নৌকায় ওঠার সময় জয়ন্তর আশেপাশে কয়েকজনকে দেখা গেলেও ডুবে যাওয়ার সময় কাছাকাছি কাউকে দেখা যায়নি। আমরা পৌরসভা সিসি ক্যামেরার ফুটেজও দেখবো। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে।
Leave a Reply