সংবাদসম্মেলনে জালিয়াতি-প্রতারনার অভিযোগ
ভোলায় মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার অহিদুর ও ইউপি চেয়ারম্যান কামালের বিরুদ্ধে মামলা
ষ্টাফ রিপোর্টার॥
ভোলা সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার অহিদুররহমান,ভেদুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও বকুল বেগম নামের এক নারীর বিরুদ্ধে প্রতারনা,ওয়ারিশ সনদ জালিয়াতি এবং সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
রোববার (১৩ আগষ্ট) বেলা ১২ ঘটিকায় ভোলা শহরের ওয়েষ্টার্নপাড়ায় একটি বেসরকারি সংস্থার হলরুমে ভূক্তভোগী আব্দুল কাদির নামের এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান এ সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদসম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুল কাদের বলেন,আমার বাবা ভোলার একজন তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তার জীবদ্দশায় সঠিক কাগজপত্র সংগ্রহের অভাবে আমার পরিবার সরকারী মুক্তিযোদ্ধাভাতা থেকে বঞ্চিত ছিলো। বাবার মৃত্যুর পর আমার “মা” নুরজাহান বেগম খুব কষ্ট শিকার করে কাগজপত্র ঠিক করলে আমরা মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেতে থাকি। আমার বাবা অন্য এক পরিবার থেকে এনে জহুরা খাতুন বকুল নামের এক কন্যা সন্তানকে আমাদের পরিবারে লালন-পালন করে বড় করেন। সেই সুবাদে বকুল আমার পালক বোন হিসেবেই পরিচিত। বকুলের বাবার প্রকৃত নাম হচ্ছ-মোতাহার মিস্ত্রি ও মায়ের নাম-ছালেহা খাতুন। কিন্তু হঠাৎ আমার বাবার মুক্তিযোদ্ধাভাতার প্রতি পালকবোন বকুলের লোভ-লালসা জম্মায়। সেই কারনে সে ভোলা সদর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার অহিদুর রহমানের স্বরনাপন্ন হয়ে কু-বুদ্ধি নিতে আসেন। এই অহিদুর রহমানের কু-পরামর্শে পালকবোন বকুল নিজেকে আমার বাবার ঔরষজাত সন্তান দাবী করে মুক্তিযুদ্ধাভাতার উপর ভাগ বসান। অথচ,আমি আমার পিতার একমাত্র সন্তান। আমার বাবার আর কোনো সন্তান নেই। একপর্যায়ে আমি বিষয়টির সমাধানকল্পে আমার মা”-কে নিয়ে প্রথমে ভোলা সদর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার অহিদুর রহমানের কাছে গিয়ে ঘটনার সুরাহা চাইলে তিনি আমার মায়ের কাছ থেকে খরচ বাবদ ৭০ হাজার টাকা দাবী করেন। ফলে বাবার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সঠিকভাবে পেতে আমার মা” খুব কষ্ট করে আমাদের একমাত্র দূধের গাভীটি বিক্রি করে অহিদ মিয়াকে ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেন। এরপর তিনি আমাকে বলেন,সবকিছু মিটমাট করতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমাদের পরিবারের ওয়ারিশ সনদ আনলে সমস্যা সমাধান করে দেয়া হবে। তার কথায় আমি ওয়ারিশ সনদ আনতে ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের কাছে যাই। কিন্ত তিনি আমাকে অহিদুররহমান ও বকুলের যোগসাজশে অনেক ঘুরাঘুরির পর একটি ওয়ারিশ সনদ দেন।যেখানে আমার জীবিত মা’কে মৃত এবং জহুরা খাতুন বকুলকে আমার পিতার ঔরষজাত কন্যা,তহুরা বেগম নামে অজ্ঞাত এক নারীকে আমার বাবার প্রথম স্ত্রী অর্থাৎ বকুলের “মা” ও আমাকে পালক পূত্র লিখা হয়। অথচ, জহুরা খাতুনবকুলের আপন চাচাতো ভাই মো: মোস্তফা নিজেও ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফাকামালের কাছে স্বাক্ষী দিয়েছিলেন যে, বকুল আমার বাবার পালক সন্তান। এরপরও আমি বিষয়টির প্রতিবাদ জানালে চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল আমার উপর চড়াও হয়ে তার গুন্ডা বাহিনী লেলিয়ে দেন। এবাহিনীর ক্যাডার আব্দুর রব,নাইম ও কালামসহ ৪/৫ জনের সন্ত্রাসী আমার উপর দুইদফা হামলা চালিয়ে আমাকে আহত করেন। আমি তখন ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেই। এরপর কাজ করতে না পারায় মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার অহিদুর রহমানের কাছে গিয়ে আমার মা” কর্তৃক তাকে দেয়া সত্তরহাজার টাকা ফেরত চাইলে তিনি আমাকে তা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। একপর্যায়ে আমাকে তিনি নতুন বাজারস্থয় ভোলা সদর মুক্তিযোদ্ধা অফিসের দোতলার একটি অন্ধকার কক্ষে আটকে রেখে ব্যাপক শারীরিক নির্যাতন চালান। কাদির বলেন,বিগত ২০২২ইং সালের ১১ ডিসেম্বর এইঘটনার পর থেকে ভোলা সদর সমাজসেবা অফিস ও সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের উপর প্রভাব বিস্তার করে অহিদুর রহমান ও মোস্তফা কামাল আমার পালক বোনকে আমার বাবার মুক্তিযোদ্ধাভাতার বিশহাজার টাকা থেকে দশহাজার টাকা কর্তন করে পাইয়ে দিচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সন্ত্রাসী ও প্রতারক অহিদ এভাবে বহু মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে ধরে এনে ভোলা সদর মুক্তিযোদ্ধা অফিসের ওই নির্ধারিত টর্চার সেলে বন্ধীকরে নির্মমভাবে নিপীড়ন চালিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে থাকেন। তার এসব দূর্ণীতি ও প্রতারনা কাজের বহুঘটনা ফাঁস করে ইতিমধ্যেই দেশের বহুল জনপ্রিয় চ্যানেল যমূনা টিভিসহ অনেক গণমাধ্যমে ভয়ঙ্কর সংবাদ প্রকাশ করা হয়। আব্দুল কাদের আরো জানান,
অহিদ ও চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের যোগসাজশে মিথ্যা ওয়ারিশ সনদের ফলে তাদের প্রত্যক্ষ নগ্ন হস্তক্ষেপে তার বাবার মুক্তিযোদ্ধা ভাতার অর্ধেক টাকা পালক বোন বকুল,চেয়ারম্যান কামাল এবং অহিদুর রহমান ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন। ফলে তিনি নিরুপায় হয়ে এসব দূর্ণীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বিগত ২৬ জুন/২৩ইং তারিখে পালকবোন জহুরা খাতুন বকুল,ভোলা সদর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার অহিদুর রহমান,ভেদুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফাকামালসহ মোট ৭জনকে আসামী করে ভোলার চীফ জুডিশিয়াল বিচারিক হাকিমের আদালতে একটি মামলা (যারনংসিআর-৩১৪),
দায়ের করেন। বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে কোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করতে ভোলার সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে প্রতিনিয়ত চেয়ারম্যান কামাল ও প্রতারক-সন্ত্রাসী অহিদুররহমান মামলা তুলে কাদিরকে চাপ প্রয়োগ করছেন। মামলা তুলে-না নিলে বাদীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হবে বলেও হুমকি অব্যহত রেখেছে বলে গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ তুলেন ভিক্টিম আব্দুল কাদির। বর্তমানে এসব ক্যাডারদের ভয়ে তার পরিবার এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে শঙ্কা প্রকাশ করেন,ভিক্টিম আব্দুল কাদির। তিনি দূর্ণীতিবাজ মুক্তিযোদ্ধা নামের কলঙ্ক প্রতারক অহিদুর রহমান ও জালিয়াতকারী ভেদুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালসহ উক্ত অপকর্মে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মূখোমূখি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
Leave a Reply