1. admin@muktijoddhatv.xyz : admin :
  2. mainadmin@muktijoddhatvonline.com : mainadmin :
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:১২ পূর্বাহ্ন

সাঁওতালদের ভূমি অধিকার রক্ষায় প্রতিবাদী মিছিল ও আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত হয়

মোঃ মামুনুর রশিদ,স্টাফ রিপোর্টার, মুক্তিযোদ্ধা টেলিভিশন
  • Update Time : সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৩
  • ৮২ Time View

সাঁওতালদের ভূমি অধিকার রক্ষায় প্রতিবাদী মিছিল ও আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত হয়

মোঃ মামুনুর রশিদ
স্টাফঃ রিপোর্টার

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি এএলআরডি আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ ও নাগরিক সংগঠন
জন উদ্যোগ গাইবান্ধার যৌথ উদ্যোগে রোববার সকাল ১১টায় গাইবান্ধা জেলা শহরের পাবলিক লাইব্রেরি মিলনাতনে প্রতিবাদী সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচী মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত হয়।

“আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আদিবাসী তরম্নণরাই মূল শক্তি”
এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বিপুল সংখ্যক সাঁওতাল নারী-পুরুষ ও অন্যান্যদের অংশগ্রহণে এ কর্মসূচি পালিত হয়। শুরুতেই সাঁওতাল নারী-পুরুষরা তাদের অধিকার ও দাবী সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে বর্ণাঢ্য মিছিল গাইবান্ধা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন ও সাঁওতাল নারী-পুরুষরা প্রতিবাদী গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন।

সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম-ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক ভূমি অধিকার কর্মী শামসুল হুদা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুবায়েত ফেরদৌস শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাজহার-উল মান্নান আদিবাসী বাঙালী সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু হিন্দু বৌদ্ধ খিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মনীন্দ্রনাথ জনউদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী জনউদ্যোগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হরেন্দ্র নাথ সিং আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু তৃষ্ণা মুরমু সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর কবির তনু আদিবাসী নেতা সুফল হেমব্রম থমাস হেমব্রম নিরঞ্জন পাহান মানবাধিকার কর্মী গোলাম রব্বানী মুসা কাজী আব্দুল খালেক বাংলাদেশ রবিদাস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক খিলন রবিদাস ভূমি উদ্ধার কমিটির নেতা ময়নুল ইসলাম আগস্টিন মিনজি তুলিপ এক্কা মাথিয়াস মার্ডি প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন বাংলাদেশে সাঁওতাল, ওঁরাও মালপাহাড়ী মাহালী গারো চাকমা মনিপুরি খাসিয়াসহ ৫০টি’র বেশি আদিবাসী জাতিসত্তা পাহাড়ে ও সমতলে বসবাস করে। যারা বাংলাদেশের নাগরিক ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। সাঁওতাল সম্প্রদায় সহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল। স্বাধীন দেশে এখনো তারা ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতি পায়নি। আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠন করা হয় নাই। আমাদের সমতলে বিভিন্ন আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা ও সাংস্কৃতি রক্ষায় নেই তেমন কোন রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ। ফলে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি হারিয়ে যাচ্ছে তাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। ক্ষমতাশালী ভূমিদস্যুরা ক্রমাগত আদিবাসী সম্প্রদায়কে উচ্ছেদ করে তাদের জায়গা জমি দখল করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
এর ফলে সমতলের আদিবাসীরা বিলুপ্ত হওয়ার পথে। ‘‘শুধু আদিবাসীই বিলুপ্ত হচ্ছে না, তাঁদের সংস্কৃতি, ভাষাও বিলুপ্ত হচ্ছে। এরা বাংলাদেশের দরিদ্রতম জনগোষ্ঠী। অধিকাংশই ভূমিহীন তাঁদের হাতে ভূমি নেই। এর অন্যতম দৃষ্টান্ত গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ।

আদিবাসী নেতারা বলেন, আদিবাসীরা জাতীয়তাবাদী ঘৃণার শিকার। ১৯৭১ সালের আগে আমরা যেমন পাকিস্তানিদের ঘৃণার শিকার হয়েছি, তেমনি আজ আমরা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ও সরকারের ঘৃণার শিকার হচ্ছি। উন্নয়ন প্রকল্পের নামে ক্রমাগত সাঁওতালসহ আদিবাসীদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী সাঁওতালরা তাদের অধিকার ও মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত। সাঁওতাল হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। এমন একটি বিভৎস, অমানবিক ঘটনার আজও বিচার কাজ শুরু হয়নি। সাঁওতাল হত্যা মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাদের কেউ গ্রেপ্তার করে না। এ নিয়ে সাঁওতালদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা সরকারের প্রতি তিন সাঁওতাল হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচার এবং জমি ফেরতের পাশাপাশি বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, লুটপাটের ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবি জানান। বক্তারা আরও বলেন, সাঁওতালদের রক্তে ভেজা জমিতে ইপিজেড করতে দেওয়া হবে না।

উলেখ্য, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় রংপুর চিনিকলের আওতায় ১ হাজার ৮৪২ একর জমি আছে। এই জমিতে উৎপাদিত আখ রংপুর চিনিকলে মাড়াই হতো। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এসব জমিতে উচ্ছেদ করতে গেলে সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে তিন সাঁওতাল শ্যামল হেমব্রম, রমেশ টুডু ও মঙ্গল মার্ডি নিহত হন। এই পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (বেপজা) কর্তৃপক্ষকে ইপিজেড বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বেপজা সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু স্থানীয় সাঁওতালরা এখানে ইপিজেড না করার জন্য আন্দোলন করছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss