1. admin@muktijoddhatv.xyz : admin :
  2. mainadmin@muktijoddhatvonline.com : mainadmin :
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় হারানো ছেলের কষ্ট বুকে মানবেতর জীবন পার করছে পটুয়াখালী মামুনের পরিবার

অপূর্ব সরকার, বিশেষ প্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা টেলিভিশন
  • Update Time : রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৪১ Time View

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায়
হারানো ছেলের কষ্ট বুকে মানবেতর জীবন পার করছে পটুয়াখালী মামুনের পরিবার

অপূর্ব সরকার,
বিশেষ প্রতিনিধি, পটুয়াখালী।

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার আলীপুরা গ্রামের মামুন মৃধার বাবা মোতালেব মৃধা ও মা মোর্শেদা বেগমের আকুতি “২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত ছেলে হত্যার বিচারের রায় মৃত্যুর আগে যেন কার্যকর দেখে যেতে পারি” এই বলে অঝোর ধারায় কান্নায় ভেঙে পরেন ।

ঢাকায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলের নেতা শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলায় মামুন মৃধা নিহত হন। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েক শতাধিক নেতা-কর্মী। অনেক জল্পনা কল্পনার পরে, দীর্ঘ ১৪ বছরে পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন দেশে-বিদেশে বহুল আলোচিত ওই মামলার রায় দেন। মামলায় ৪৯ জনকে আসামি করা হয়।হামলায় অতোপ্রতো ভাবে জড়িত থাকার দায়ে উক্ত রায় অনুযায়ী সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ও দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাবেন—এই আশায় দরিদ্র পরিবারের সন্তান মামুন ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকার কবি নজরুল কলেজে। ওই কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার মঞ্চের খুব কাছেই ছিলেন মামুন। গ্রেনেড হামলায় মাথায় স্প্লিন্টার ঢুকে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। স্বজনেরা বিভিন্ন হাসপাতাল খুঁজে অবশেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তার মরদেহ শনাক্ত করেন। ২৩ আগস্ট গ্রামের বাড়িতে মামুনের লাশ দাফন করা হয়।

৫ ভাইবোনের মধ্যে মামুন ছিলেন বড়। ২০০৩ সালে স্থানীয় আলীপুর বি বি রায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে মামুন কবি নজরুল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর চাচা আলী হোসেনের দোকানে খণ্ডকালীন কাজ করতেন। এ ছাড়া, টিউশনি করে বাড়িতে টাকাও পাঠাতেন।দশমিনার আলীপুর গ্রামে কথা হয় মামুনের বাবা মোতালেব মৃধা ও মা মোর্শেদা বেগমের সঙ্গে। নিয়ে যান ছেলের কবরের পাশে। সেসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা।মামুনের ৪ বোনের বিয়ে হয়েছে। মা-বাবা বাড়িতে থাকেন। অসুস্থ মা-বাবার সেবার জন্য ছোট মেয়ে তুলি থাকেন তাদের সঙ্গে। মামুন নিহত হওয়ার পর শেখ হাসিনা তাদের ১০ লাখ টাকা দেন। তার এক বোন ঝুমুরের বিয়ের সময় দিয়েছিলেন ২৫ হাজার টাকা। অপর বোন রুবিনা আক্তার ও তুলিকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে ধারদেনা করে।

মামুনের বাবা মোতালেব মৃধা বলেন, ২০১৪ সালের ১৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। পটুয়াখালী সোনালী ব্যাংক শাখায় জমা রাখা ওই টাকার মুনাফা হিসেবে মাসে ৮ হাজার ৬০০ টাকা করে পান। সেই টাকা দিয়েই অনেক টা কষ্টে চলছে তাদের সংসার। মামুন থাকলে হয়ত জীবন টা অন্ন রকম হতো যা আজ শুধু একটা স্মৃতি। তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন রোগাক্রান্ত এখন কোন কাজ করতে পারি না। ব্যাংক থেকে যে টাকা পাই তা দিয়েও সংসার চলে না। আমাদের ২ জনের জন্য মাসে কমপক্ষে ৫ হাজার টাকার ওষুধ-পথ্য কিনতে হয়। এক মেয়ে ও নাতনী থাকে আমাদের সঙ্গে। ছোট মেয়ে তুলি বিএ পাস করেছে। তার চাকরির জন্য অনেকের কাছে ধরনা দিয়েছি। ওর চাকরি হলেও নিশ্চিন্তে থাকতে পারতাম,’ যোগ করেন তিনি।

মামুনের মা মোর্শেদা বেগম বলেন, ‘আমার মামুনকে যারা মেরে ফেলল, সেই হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। কিন্তু, রায় এখনো কার্যকর হয়নি। মৃত্যুর আগে আমরা এ রায়ের বাস্তবায়ন দেখে যেতে পারলে কিছুটা হলেও শান্তি পেতাম।

মামুনের চাচা মনির মৃধা বলেন, ‘২১ আগস্ট আসলেই নেতারা এসে মামুনের কবরে ফুল দেন, মিলাদ মাহফিল করেন। কিন্তু, সারা বছর মামুনের পরিবার কেমনে চলে সে খবর কেউ রাখে না। এই ২১ আগস্ট আসে শুধু ছবি তোলার জন্যে,আর মিথ্যা লোক দেখানো আসা দেয়ার জন্যে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss