1. admin@muktijoddhatv.xyz : admin :
  2. mainadmin@muktijoddhatvonline.com : mainadmin :
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন

পটুয়াখালীতে প্রকৌশলী‘র ঘুষ বাণিজ্যে অসহায় ঠিকাদার

অপূর্ব সরকার, বিশেষ প্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা টেলিভিশন
  • Update Time : রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১০৩ Time View

পটুয়াখালীতে প্রকৌশলী‘র ঘুষ বাণিজ্যে অসহায় ঠিকাদার

অপূর্ব সরকার,
বিশেষ প্রতিনিধি, পটুয়াখালী।

পটুয়াখালীতে ভৌতিক অজুহাতে অতিরিক্ত পারসেন্টেজ আদায়,টেন্ডার নীতিমালা না মেনে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া,স্বেচ্ছাচারীতা এবং অসদাচরনসহ বিস্তর অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালী এলজিইডি‘র সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মীর আলী শাকিরের বিরুদ্ধে। শাকিরের অনৈতিক দরকষাকষিতে একাধিক প্রকল্প হুমকী মুখে পরেছে বলে দাবি ভুক্তভোগীদের।অভিযোগ রয়েছে-উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের আদেশ ও টেন্ডার নীতিমালা না মেনে অর্থের বিনিময় টেন্ডার প্রাক্কলন বিক্রি করছেন তিনি। অর্থ নিয়ে কাজ বিক্রির ঘটনায় স্থানীয় ঠিকাদারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার দ্বন্দ হলেও তার টেন্ডার দুর্নীতি বন্ধ হয়নি। এসব ঘটনায় নামে বে-নামে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোতে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এসব অভিযোগের তদন্ত হলেও অভিযুক্ত শাকিরের স্বেচ্ছারীতা ও অনৈতিক চাহিদা নিয়ন্ত্রনে আসেনি। শুধু ঠিকাদার নয়, অফিস স্টাফদের সঙ্গে হরহামেশা অসদাচরনে লিপ্ত হন তিনি। ইতোমধ্য পটুয়াখালী-বরগুনা প্রকল্পের চুড়ান্তর বরাদ্দ ফেরত যাওয়ার অভিযোগটি দুদক তদন্ত করছেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে মীর আলী শাকির বলেন-তিনি কোন ঘটনায় কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী বলেন-এলটিএম টেন্ডার লটারী সম্পাদনের পর দরপত্রে সংযুক্ত পে-অর্ডার অবমুক্তের নিয়ম থাকলেও শাকির তিন-চার মাস ঠিকাদারকে দিকভ্রান্ত করে পে-অর্ডার অবমুক্ত করেন। এতে ব্যাংক থেকে লোনে পে-অর্ডার নেয়া ঠিকাদার ঋনের বোঝা ভারী হতে থাকে। এ নিয়ে তার কাছে ওজোর-আপত্তি করলে তিনি ঠিকাদারের সঙ্গে দুর্ব্যাবহার করেন।কাজের কার্যাদেশ দেয়া,টাইম এক্সটেনশন, চুক্তিপত্র,ল্যাব টেষ্ট,টেন্ডার লটারী,ইন্সুরেন্স,বিল পরিশোধ এবং এলজিইডির রোলার নিতে অতিরিক্ত ঘুষ আদায় করতে পদেপদে হয়রানী করেন। তার দাবি না মেটালে বিল আটকে দেন অথবা ঠিকাদারের মূখে বিলের ফাইল ছুরে মারেন। ভুক্তভোগীরা বলেন তার কক্ষে ঢুকে আগে পিসি,পরে টেবিলে ফাইল ধরে স্বাক্ষর নিতে হয়। পিসি ব্যতীত তার সামনে ফাইল ধরলে তিনি র্দূব্যবহার করে রুম থেকে বেড় হতে বলেন। শহরের এক ঠিকাদার বলেন-গত জুনে একটি বিলে স্বাক্ষর করাতে শাকির ২ লাখ টাকা দাবি করলে অর্থ সংকট থাকায় তাকে এক লাখ দেই; এতে তিনি বিল আটকে দেন। পরে সুদে টাকা সংগ্রহ করে তাকে টাকা দিলে তিনি বিলে স্বাক্ষর করেন; ততক্ষনে হিসাব রক্ষন অফিসের সার্ভার বন্ধ হয়ে বিল ফেরত গেছে।
একাধিক ঠিকাদার বলেন-শাকিরের এই ঘুষ বাণিজ্যে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জুনে পটুয়াখালী-বরগুনা প্রকল্পের একাধিক কাজের অন্তত ৩০ কোটি টাকা ফেরত গেছে। অথচ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি সামাল দিতে এ্যাকাউটেন্ট জাকির হোসেনকে বদলি করেন কর্তৃপক্ষ।
ভুক্তভোগীরা ক্ষোভে বলেন-“অপরাধ করলে পুলিশ জেলে পাঠায় অথবা শরীরে আঘাত করে;কিন্তু এলজিইডি‘র কর্মকর্তারা ঘুষ না পেলে পেটে লাথি মারেন। নানা ঘটনায় অভিযুক্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে গনমাধ্যমে মুখ খুললেও তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারছিনা। প্রতিবাদী ঠিকাদার চিহ্নিত করে পরবর্তীতে কাজ না দেয়ার নানা ছক রয়েছে তাদের। গত এক দশকেও তার মত কর্মকর্তার মুখোমুখি হতে হয়নি বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ-মীর আলী শাকির পটুয়াখালীতে যোগদানের পর টাকা নিয়ে টেন্ডার নীতিমালা না মেনে মো.ইউনুচ এ্যান্ড ব্রার্দাসকে সিংহভাগ কাজ দিয়েছেন। মো.ইউনুচ এ্যান্ড ব্রার্দাসকে কাজ দেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই, দরপত্রের সঠিক তথ্য উপস্থাপন না করে কার্যাদেশ দেন। এমনকি কাজের ক্ষেত্রে এলজিইডির সঙ্গে ইউনুচ এ্যান্ড ব্রাদার্স‘র সকল চুক্তিপত্র প্রতারনার মাধ্যমে করেছেন এলজিইডি। এসব ঘটনায় নামে বে-নামে এলজিইডি‘র সচিব এবং দুদকে অভিযোগ দিলেও তদন্তের নামগন্ধ নেই। অফিস প্রধানের দায়িত্ব অবহেলার কারনে এলজিইডিকে নিজ প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছেন শাকির। ভুক্তভোগীরা অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটির দাখিলকৃল সকল কাগপত্র যাচাই-বাছাইসহ নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করেছেন।
উল্লেখিত ঘটনায় গত ১৪ জুন জনৈক ঠিকাদার গোলাম সরোয়ার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়,মন্ত্রী পরিষদ সচিব,দুদক এবং এলজিইডির সচিবকে লিখিত অভিযোগে বলেন-পটুয়াখালী এলজিইডি‘র দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা টেন্ডার নীতিমালা না মেনে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া অব্যাহত রেখেছেন। এসকল কর্মকর্তাদের কারনে একটি সিন্ডিকেট হাজার কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিচ্ছে এবং কাজের মান নিয়ে বির্তক হলেও এলজিইডি অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের চুড়ান্ত বিল পরিশোধ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ঠিকাদার বলেন-গত ২৩ আগষ্ট এলজিডি ও স্থানীয় ঠিকাদারের সঙ্গে এক বৈঠকে “টেন্ডার বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা” বজায় রেখে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্নের দাবি জানালে সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মীর আলী শাকির ঠিকাদারে উদ্দেশ্যে বলেন-“টেন্ডার বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর আদেশ তৃতীয় স্থানে”। মীর আলী শাকিরের এ বক্তব্যের উপস্থিত ঠিকাদার বিক্ষুব্ধ হয়ে তার বক্তব্য ফিরিয়ে নিতে বললে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।
অভিযুক্ত শাকিরের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ এনে গত ৪ জুলাই ক্রিপ প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের নারী শ্রমিকরা প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগে উল্লেখ বলা হয়-সদর উপজেলার মরিচ বুনিয়ায় ক্রিপ প্রকল্পের আওতায় এলসিএস গঠন করে একটি সড়ক সংস্কার সম্পাদন,ব্যাংক হিসাব খোলাসহ আনুসাঙ্গিক বিষয়াদি শেষ করে উপজেলা প্রকৌশলী আহমদ আলীর কাছে কাজের টাকা পেতে বিল দাখিল করেন। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলী ঘুষের জন্য তাদের বিল আটকে দিয়ে নারী শ্রমিককদের ঘুরপাক খাওয়ান। পরবর্তীতে সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মীর আলী শাকিরের দারস্থ হয়ে বিল পেতে ধর্না ধরলে নারী শ্রমিকদের কাছে শাকির ৩ পারসেন্ট অগ্রীম টাকা চান। নারী শ্রমিকরা বলেন-উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তরের ৬ পারসেন্ট ঘুষ দিয়েও কাজের নিয়ে ঘরে যেতে পারিনি। অথচ ক্রিপ প্রকল্পের অনেক কাজ শেষ না হলেও তাদের চুড়ান্ত বিল দিয়েছেন। এরমধ্য গত ২৪ আগষ্ট নারী শ্রমিকদের অভিযোগটির তদন্ত করেছেন এলজিইডি‘র বরিশাল অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান।যদিও এসব প্রসঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তাকে একাধিক কল দেয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেনি। পটুয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন-অনেক গুলো প্রসঙ্গ তো, ফোনে সম্ভব নয়, আসেন সামনা-সামনি কথা বলি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss