প্রধানমন্ত্রীর কাছে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা কন্যার আকুল আকুতি
অপূর্ব সরকার,
বিশেষ প্রতিনিধি, পটুয়াখালী।
পটুয়াখালীতে অবৈধভাবে জমি দখলের জন্য একাধিক মিথ্যা মামলায় হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা কনস্টেবল ইউসুফ আলী মৃধা (মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের শহীদ পুলিশ গেজেট নং-৩১৬) এঁর একমাত্র এতিম কন্যা মোসাঃ রিনা বেগমের সংবাদ সম্মেলন।
বৃহষ্পতিবার(২১সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মোসাঃ রিনা বেগম বলেন, আমার বাবা পুলিশ কনস্টেবল ইউসুফ আলী মৃধা ১৯৭১ সালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে হানাদার পাক-বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধে নিহত হন। তাঁর নামে পটুয়াখালী পুলিশ লাইন্সে শহীদ কনস্টেবল বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী মৃধা নামে একটি ভবনের নামকরন করা হয়েছে। এলাকায় আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে পরিচিত হয়ে বসবাস করছি। আমি আমার স্বামী আবুল হাশেম ও দুই সন্তান বড় ছেলে মোঃ মামুন মৃধা ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকুরী করেন এবং ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম বাচ্চু সুবিদখালী বাজারে এসি ও ফ্রিজের সার্ভিসিং দোকান দিয়ে ব্যবসা করে আসছে।
আমি ( রিনা বেগম) ২০১৭ সালে মির্জাগঞ্জ উপজেলার ককড়াবুনিয়া ইউনিয়নের জলিল প্যাদা, হেলেনা বেগম ও আসমা বেগমের নিকট হতে বৈদ্যপাশা মৌজার ৫২ নং জে. এল এর ৬৬ নং খতিয়ানের ৬০৬ ও ৬০৯ নং দাগের ১০ শতাংশ জমি ক্রয় করে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপন করে ভোগ দখলে আছি। এ অবস্থায় একই এলাকা বৈদ্যপাশার চিহ্নিত মাদক ব্যাবসায়ী, চাঁদাবাজ, মাস্তান ভূমি লোভী, নারী কেলেঙ্কারীর সাথে জড়িত মোঃ হুমায়ুন কবির, মোঃ সোহাগ, মোঃ শহিদুল, মোঃ আলমগীর, মিজানুর রহমান, স্বপন হাওলাদার, আলতাফ হাওলাদার, সোলাইমান প্যাদা, সাকিল প্যাদাগং উক্ত জমিসহ একই মৌজার ৭৪ নং খতিয়ানের ৫৯৩ দাগে ৮০ শতাংশের বসত বাড়ি ও ভিটা ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে অবৈধভাবে দখল করে উচ্ছেদ করার জন্য আমাকেসহ আমার স্বামী, দুই ছেলেসহ বসুর-দেবর, চাচাতো ভাই ও আত্মীয়স্বজনদের নামে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনকে দিয়ে মিথ্যাভাবে পর পর ৫ টি সিআর ও জিআর মামলা করে নানাভাবে নির্যাতনসহ হয়রানী করে আসছে। সর্বশেষ চলতি বছরের জুলাই মাসের ৪ জুলাই হুমায়ুন কবির তার ছোট ভাই সোহাগ হাওলাদরকে দিয়ে মির্জাগঞ্জ উপজেলা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ছুটির দিন ৩০.০৬.২৩ ইং তারিখ শুক্রবার ঘটনা উল্লেখ করে আমার দুই ছেলেসহ ১৫ জনকে আসামী করে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এ মামলায় বিজ্ঞ আদালত আমার ( রিনা বেগম) ছেলে মোঃ বাচ্চু মৃধা, দেবরের ছেলে মোঃ সজিব ও বাসুরের ছেলে সাইফুল ইসলামকে জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন। বর্তমানে তার জেল হাজতে আছে।
সংবাদ সম্মেলনে রিনা বেগম বলেন, এ মামলাটি সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট। তিনি জানান, হুমায়ন কবির তার ছোট ভাই সোহাগ হাওলাদারকে বাদী বানিয়ে উক্ত বিজ্ঞ আদালতে দায়ের করা একটি সিআর নং ৪৪/২৩ মামলা করলে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। থানা মামলাটি মিথ্য- বানোয়াট প্রমানিত হওয়ায় ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে। অপর একটি সিআর মামলা বিজ্ঞ আদালত তদন্ত পূর্ব রিপোর্ট দেয়ার জন্য মির্জাগঞ্জ উপজেলার দেউলি পল্লী মঙ্গল মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেন। প্রধান শিক্ষক অপারগতা প্রকাশ করায় ইউপি চেয়ারম্যানকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে রিনা বেগম জানান।
সংবাদ সম্মেলনে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের এতিম কন্যা রিনা বেগম উক্ত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ভূমিলোভী মস্তানদের কবল থেকে তার ও তার সন্তানদেরসহ পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা ও জীবন রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্বরাস্ট্র মন্ত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকদের মাধ্যমে আকুতি জানিয়েছেন।
এ সময় তার সাথে ছিলেন, স্বামী মোঃ হাসেম মৃধা, চাচাতো ভাই মোঃ মেনাজ প্যাদা , মোতালেব প্যাদা, ভাসুর মন্নান মৃধা, দেবর হোসেন মৃধা ও ভাগ্নে সুমন মিয়া।
Leave a Reply