পটুয়াখালীতে চাঞ্চল্যকর শিশু রাতুল হত্যা মামলার দুই আসামী গ্রেফতার…
অপূর্ব সরকার,
বিশেষ প্রতিনিধি, পটুয়াখালী।
পটুয়াখালীর আউলিয়াপুর ইউনিয়নে শিশু রাতুল’ হত্যাপূর্বক মৃতদেহ গুমসহ চেতনানাশক প্রয়োগের মাধ্যমে চুরির ঘটনা মামলার দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সভা কক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অর্থ) আহমাদ মাঈনুল হাসান কর্তৃক আয়োজিত প্রেসব্রিফিং -এ জানান,ঘটনারদিন ১৮.০৯.২৩ইং তারিখ রাতে জেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ছোট আউলিয়াপুর গ্রামে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন লোক কৌশলে মোঃ গোলাম রহমান লিটন (৪৫) এর বসত ঘর ও বসত ঘরের পাশের ডেকোয়ারের দোকানে প্রবেশ করে বসত ঘর ও ডেকোয়ারেশনের দোকানে থাকা মূল্যবান মালামাল চুরি করে নেয়। পরে চোরদল গোলাম রহমান লিটনের ১০ বছরের ছেলে রাতুলকে মুখ চেপে ধরে অপহরন করে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে রাতুলের লাশ একই ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের পূর্ব আউলিয়াপুর গ্রামের মোঃ জয়নাল বিশ্বাসের বাড়ির পিছনে পরিত্যক্ত একটি ঘরের মেঝেতে মাটি চাপা দিয়ে রাখে। এ ঘটনায় রাতুলের বাবা গোলাম রহমান লিটু সদর থানায় ২১.০৯.২৩ইং তারিখ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৭/৩০ তৎসহ ৩২৮/৪৫৭/৩৮০ পেনাল কোড মামলা রুজু করেন। মামলা নং-২১।
এ মামলার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন পূর্বক বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত, আলামত সংগ্রহ পূর্বক ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের তৎপর হয়। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজলের নেতৃত্বে একটি পুলিশ দল ২৫.০৯.২৩ ইং তারিখ রাতে পার্শ্ববর্তী জৈনকাঠী ইউনিয়নের সেহাকাঠী থেকে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আনোয়ার হোসেন (৪৫) ও হানিফ হাওলাদার (৪১)কে আটক করে।জিজ্ঞাসাবাদে আটক আনোয়ার পুলিশকে জানায়, ঘটনারদিন রাতে
গোলাম রহমান লিটনের ছেলে রাতুলকে সাইকেল কেনার জন্য ১৪ হাজার টাকা দেয়ার লোভ দেখিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতমতে ছেলে রাতুলের মাধ্যমে চেতনা নাশক ঔষধ তাদের খাবারে মিশিয়ে তার বাবা, মা ও দাদীকে অচেতন করে গভীর রাতে ঘরের পিছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করে সামনের দরজা খুলে ঘর সংলগ্ন মালামালের ডেকোরেটর দোকান হতে সাউন্ড সিস্টেমের বিভিন্ন দামী সরঞ্জামাদি, অটোরিক্সার ব্যাটারী চুরি করে। এ ঘটনা রাতুল বাবা- মাকে জানাতে পারে সন্দেহে রাতুলকে ঐ রাতেই রাতুলকে মুখ চেপে ধরে নিয়ে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।
এ হত্যাকান্ড ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য রাতুলের লাশ গুমের উদ্দেশ্যে আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডস্থ পূর্ব আউলিয়াপুর জয়নাল বিশ্বাসের বাড়ীর পিছনে পরিত্যক্ত টিনসেডের ঘরের মেঝে মাটিতে গায়ে লবণ দিয়ে পলিথিনে মুড়িয়ে চাপা দিয়ে রাখেন। তাদের দেয়া তথ্যমতে চোরাইকৃত মালামাল আটক হানিফ হাওলাদার ঘরের পিছনে রান্না ঘরের মাটির নিচ হতে সাউন্ড সিস্টেমের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি এবং বসত ঘরের পিছনে ডোবা হতে অটোরিক্সার ব্যাটারী উদ্ধার হয়। আটকদ্বয়কে জেল হাজতে প্রেরনের জন্য কোর্টে পাঠানো হবে বলে সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ জসিম জানান।
ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে বলেও সদর থানার ওসি জানান।
Leave a Reply