1. admin@muktijoddhatv.xyz : admin :
  2. mainadmin@muktijoddhatvonline.com : mainadmin :
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন

চুয়াডাঙ্গা ৭ই ডিসেম্বর পাক হানাদার মুক্ত দিবস।

বায়েজীদ জোয়ার্দার, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ৭৮ Time View

চুয়াডাঙ্গা ৭ই ডিসেম্বর পাক হানাদার মুক্ত দিবস।

চুয়াডাঙ্গা পতিনিধিঃ
বায়েজিদ জোয়ার্দার

অদ‍্য ৭ই ডিসেম্বর ২৩ ইং সকাল ৬.৩০ ঘটিকায় চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ফুল দিয়ে বণ‍াঢ‍্য আয়োজনের মধ‍্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ চুয়াডাঙ্গা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ আয়োজনে ৭ই ডিসেম্বর পাক হানিদার বাহিনী মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে।
এই মুক্ত দিবস উপলক্ষে সকাল ৬.৩০ঘটিকায় সময় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি পুস্পস্তবক অর্পন,৭.৩০ ঘটিকায় র‍্যালি,৮.৩০ ঘটিকায় শহীদ আট কবরে পুস্পস্তবক অর্পণ ৯.০০ ঘটিকায় জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযোদ্ধা স্মতি পতাকা উত্তর করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি,দক্ষিণ পশ্চিম রনাঙ্গের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান হক জোয়ার্দার ছেলুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক সফল মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দার টোটন,সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সী আলমগীর হান্নান,চুয়াডাঙ্গা পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি হেলা, চুয়াডাঙ্গা সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি ও ক্রিড়া সহসাধারণ সম্পাদক মোনাইম হাসান জোয়ার্দার অনিক,বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ খুলনা বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহবায়ক ও সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গরীব রুহানি মাসুম,যুগ্ন আহবায়ক বায়েজিদ রহমান জোয়ার্দার,সদস‍্য সচিব বখতিয়ার হোসেন জোয়ার্দার সহ অনেকে। অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠ করা হয়।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগ নেত্বীবৃন্দু, পৌর আওয়ামীলীগ,মহিলা আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ,কৃষক লীগ,মক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ সহ অনেকে ।
উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন চুয়াডাঙ্গা মুক্ত দিবস। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিগাঁথা এই দিনে চুয়াডাঙ্গা পাক হানাদার মুক্ত হয়েছিল,উড়েছিল বিজয়ের পতাকা।১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে পরাজিত করে চুয়াডাঙ্গা শত্রুমুক্ত করেন বাংলার বীর মুক্তিকামী সন্তানেরা।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালোরাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞের পরই চুয়াডাঙ্গার হাজার হাজার মুক্তিপাগল দামাল সন্তানেরা বঙ্গবন্ধুর সেই উদাত্ত আহ্বানের মধ্য দিয়ে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলেন। একই রাতে যশোর সেনানিবাস থেকে একদল সৈন্য কুষ্টিয়া শহর দখল করে নেওয়ার খবরে মুক্তিযোদ্ধারা শহর রক্ষার জন্য শহরের প্রবেশ পথগুলোতে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকা থেকে আনসার, মুজাহিদ ও স্বেচ্ছাসেবকগণ শহরের টাউন হলে একত্রিত হয়ে চুয়াডাঙ্গা ট্রেজারি থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থা দৃঢ় করেন।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা শত্রুমুক্ত থাকার খবর শুনে আওয়ামী লীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তীতে বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ ভারত গমনের উদ্দেশ্যে ব্যারিস্টার আমীর-উল-ইসলামকে নিয়ে ৩০ মার্চ চুয়াডাঙ্গায় আসেন। এসময় তিনি সার্বিক পরিস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে চুয়াডাঙ্গাকে যুদ্ধকালীন সময়ের জন্য বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী ঘোষণা দেন।

বিদেশি সংবাদিকদের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা ডেটলাইনে বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থা বিশ্বব্যাপী প্রচারিত হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা পাকিস্তানি বাহিনীর টার্গেটে পরিণত হয়। ৩ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গার ওপর প্রথম বিমান হামলা চালানো হয়।

১০ এপ্রিল ভারতের আগরতলায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ২৮ জন সংসদ সদস্যের (এমপি) উপস্থিতিতে এক সভায় অস্থায়ী সরকারের রাজধানী ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান বাংলাদেশের মুক্তাঞ্চল চুয়াডাঙ্গায় করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। যদিও সিদ্ধান্তটি নিরাপত্তাজনিত কারণে গোপন রাখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেই খবরটি দ্রুত বিদেশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে; যার ফলশ্রুতিতে পাকিস্তান বাহিনীর টার্গেটে পরিণত হয় চুয়াডাঙ্গা।

এরপরই মূলত চুয়াডাঙ্গার ওপর ব্যাপকভাবে বিমান হামলা চালাতে শুরু করে হানাদার বাহিনী। একইসঙ্গে যশোর সেনানিবাস থেকে হানাদার বাহিনীর একটি দল ১৬ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় প্রবেশ করে। চুয়াডাঙ্গায় প্রবেশের পরই হানাদার বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অনেক মানুষকে হত্যা করে শহর দখলে নেয়। এ খবরে দ্রুত দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গনের সদর দপ্তর চুয়াডাঙ্গা থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সময়ে যুবনেতা বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন মহোদয়ের নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গার তরুণদের একত্রিত করে ২২ এপ্রিল ভারতের হৃদয়পুর শিবিরে ১২০ জন যুবক নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম ক্যাম্প চালু করা হয়। চুয়াডাঙ্গা ৮ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত হয়ে চলতে থাকে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রণাঙ্গনে গেরিলা যুদ্ধ। ৫ আগস্ট চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদহের কাছে বাগোয়ান গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে পিন্টু, হাসান, খোকন, কাশেম, রবিউল, রওশন, তারিক ও আফাজউদ্দিন নামে আটজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাদের জগন্নাথপুর গ্রামের দুটি কবরে দাফন করা হয়, যা এখন আট কবর নামে পরিচিত। এ ছাড়া ৭ আগস্ট জীবননগর থানার ধোপাখালি সীমান্তে নিয়মিত বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তানি বাহিনীর মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পাঁচজন শহীদ হন। সেপ্টেম্বরে ৮ নম্বর সেক্টর কমান্ডার হিসেবে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল মনজুর ও মেজর আবু উসমা দায়িত্ব নেন। তারা যুদ্ধ বেগবান করা ও বিজয় অর্জনের লক্ষে যুদ্ধ কৌশলে পরিবর্তন আনেন।

২৬ নভেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীকে হটিয়ে দিয়ে জীবননগরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। ৪ ডিসেম্বর মুক্ত হয় দর্শনা। ৭ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গা থেকে শত্রুদের হটিয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিকামী মানুষ। বিজয়ের বেশে চুয়াডাঙ্গায় প্রবেশ করেন মুক্তিযোদ্ধারা।

স্বদেশের পতাকা উড়িয়ে ‘জয় বাংলা’ ধ্বনিতে আনন্দ উল্লাস করে এলাকার মুক্তিকামী মানুষ। চুয়াডাঙ্গায় মোট বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন ১ হাজার ৬শ’ ৩১ জন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss