ডিসি সম্মেলন শুরু আগামীকাল, ৩৫৬ প্রস্তাব ডিসিদের
চুয়াডাঙ্গা পতিনিধিঃ
বায়েজিদ জোয়ার্দার
চার দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হচ্ছে আগামীকাল রোববার। এই সম্মেলন চলবে ৬ মার্চ পর্যন্ত। এই সম্মেলনে আলোচনার জন্য ৩৫৬টি প্রস্তাব দিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি (২২টি) প্রস্তাব এসেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের বিষয়ে। এসব বিষয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন সরকারের নীতিনির্ধারকেরা।
আজ শনিবার বিকেলে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ডিসি সম্মেলনের বিভিন্ন বিষয় তথ্য তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
অন্যান্য বছর ডিসি সম্মেলন তিন দিনব্যাপী হলেও এবার সেটি হচ্ছে চার দিনব্যাপী। আগামীকাল সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উল্লেখ্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হয় এই ডিসি সম্মেলন। ডিসি সম্মেলনে মন্ত্রী-সচিবদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সম্পর্কে ডিসিদের দেওয়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হয়। ডিসিরা মাঠপর্যায়ে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে থাকেন। সরকারের নীতিনির্ধারণী বিষয়, উন্নয়ন কর্মসূচি ও অন্যান্য বিষয়ে মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে থাকেন ডিসিরা। এ জন্য এ সম্মেলন ও তাঁদের প্রস্তাবকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়।
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠনের পর এটিই প্রথম ডিসি সম্মেলন। ফলে এবারের সম্মেলনকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ, সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে বিষয়ে দিক-নির্দেশনার বিষয় আছে।
এবারের ডিসি সম্মেলনে মোট ৩০টি অধিবেশন হবে। এর মধ্যে ২৫টি কার্য অধিবেশন। কার্য অধিবেশনগুলো হবে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। বাকি পাঁচটি অধিবেশনের মধ্যে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, একটি জাতীয় সংসদের স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়, একটি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং আরও দুটি অধিবেশন রয়েছে।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া লিখিত তথ্যে বলা হয়, এবারের সম্মেলনে প্রধান আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণরোধ, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম জোরদার করা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম, স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি বাস্তবায়ন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্ন্যান্স, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয় করা।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন জানান, গত বছর (২০২৩) মোট ২১২টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি, অর্থাৎ এক বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল এ রকম সিদ্ধান্ত হয়েছিল ৫২টি, যার বাস্তবায়নের হার ৮৯। তিন বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের (মধ্যমেয়াদি) জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ৯০টি। এগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত বাস্তবায়নের হার ৫৯। আর ৫ বছরের জন্য যেসব সিদ্ধান্ত (দীর্ঘমেয়াদি) নেওয়া হয়েছিল ৭০টি। এখন পর্যন্ত যার বাস্তবায়নের হার ৪৫।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন বাস্তবায়নের এই হারে তাঁরা সন্তুষ্ট। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাকি সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
Leave a Reply