খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধিঃ
মোঃ আব্দুর রাজ্জাক সুমন
“” নিজের খাবার বিলিয়ে দিবো অনাহারীর মুখে “” রামগড় উপজেলায় খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার
যে কোনো ঈদ বা উৎসবে সবাই তার সর্বোচ্চ দিয়ে আনন্দ উদযাপন করতে চায়। কিন্তু সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষ গুলো চাইলেও ঈদের এই পরম আনন্দ মুহূর্তের আনন্দ গুলো উদযাপন করতে পারেনা। খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার মুক্তাধর পিপিএম (বার) এই বিষয় গুলো খুব ভালো ভাবেই উপলব্ধি করতে পেরে । তার প্রমাণ রেখেছেন তার এই জেলায় যোগদানের পর থেকে বৈচিত্র্যময় সামাজিক সহায়তা মূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে। অদ্য ০৪/০৪/২৪ তারিখে তিনি ছুটে গেছেন রামগড় উপজেলায় তৃতীয় লিঙ্গ এবং প্রতিবন্ধীদের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী ও ইফতার বিতরণ করার জন্য।
তৃতীয় লিঙ্গ এবং প্রতিবন্ধীদের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী ও ইফতার বিতরণ করার পর খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ গুলোকে সমাজে প্রায়ই অবমূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। কিন্তু তারাও মানুষ, আমাদের মত তাদের অনুভূতি আছে, তারাও চায় ঈদের আনন্দ উদযাপন করতে। এবং প্রতিবন্ধীর লোকজন তাদের শারীরিক অক্ষমতার কারণে সমাজের অন্যান্য মানুষদের থেকে অনেক পিছিয়ে থাকে। তাই আমি চাই সমাজের এই সুবিধা বঞ্চিত মানুষ গুলো যেন তাদের ঈদের আনন্দ টুকু করতে পারেন। সমাজের সবাই যদি সুবিধা বঞ্চিত মানুষ গুলোকে নিয়ে চিন্তা করে তাহলে কখনোই এই আনন্দের সময় গুলি তারা মলিন ভাবে কাটাতে হয় না। আমরা চাই সবাই যেন সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ গুলোকে নিয়ে চিন্তা করেন।
নিজের খাবার বিলিয়ে দিব অনাহারের মুখে ” কামিনী রায়ের এই কবিতার লাইনকে আমরা অনুসরণ করলে সমাজের সবাই একসাথে সুখে থাকতে পারব।
তৃতীয় লিঙ্গ এবং প্রতিবন্ধীরা খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপারের কাছ থেকে ঈদ উপহার সামগ্রী ও ইফতার পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছে । এ সময় প্রায় ৫০ জনের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী ও ইফতার বিতরণ করা হয়।
একজন তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য ঈদ উপহার সামগ্রী ও ইফতার পেয়ে তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে যা বলেন, আমরা সমাজের অবহেলিত সদস্য। আমাদের কে কেউ মূল্যায়ন করতে চায় না। আমাদের তো বিশ্বাসই হয় না এত বড় একজন অফিসার আমাদের জন্য উপহার সামগ্রী নিয়ে এসেছে । আমাদের সবাই কে একটি করে উপহার দেওয়া হয়েছে। আমাদেরকে কখনোই এ ভাবে মূল্যায়ন করা হয় নাই । আমরা চাই আমাদেরকেও সবাই মূল্যায়ন করুক। স্যারের প্রতি অনেক ধন্যবাদ। স্যার আমাদের সামাজিক উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন, এটা আমরা আশা রাখি।
অন্যদিকে একজন প্রতিবন্ধী তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে যা বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে আমরা মন থেকে চাইলেও অনেক কিছু করা সম্ভব হয় না। সমাজের সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের মতো আমরাও কাজ করতে চাই, সক্ষমতা অর্জন করতে চাই, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তা হয়ে উঠে না। তাই আমরা সব সময় সুবিধা বঞ্চিতদের অন্তর্ভুক্ত। স্যারের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, স্যার ঈদের আনন্দ আমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। স্যার আমাদের কথা মনে না রাখলেও স্যারের কিছুই হত না। কিন্তু স্যার এই উপহার দেওয়ার মাধ্যমে আমাদের পরিবার গুলোর মুখে একটু হলেও হাসি ফুটিছে । যা কখনোই অর্থ দিয়ে মূল্যায়ন করা যাবে না। মন থেকে দোয়া করি, স্যার যেন তার পরিবার নিয়ে সব সময় ভালো থাকেন।
Leave a Reply